ALL OF IT PRODUCT

PRODUCT REVIEW

সর্বশেষ প্রযুক্তির কিবোর্ড, মাউস থেকে শুরু করে হার্ডড্রাইভ, র‌্যাম, প্রসেসর,প্রিন্টার, সুইচ রাউটার মোডেম, স্ক্যানার মাদারবোর্ড, ওয়েবক্যাম, পেনড্র্রাইভ, আইপি ক্যামেরা সহ কম্পিউটারের ও অন্যান্য যাবতীয় হার্ডওয়্যার ও এক্সেসরিজের জন্য ভিজিট করুন প্রোডাক্ট পেজ:

১.দুই বছরের ওয়ারেন্টি সহ বিশ্ববিখ্যাত ব্রাণ্ডেড ওয়েবক্যাম মাত্র ১৭০০/=

২.দুই বছরের ওয়ারেন্টি সহ ব্রাণ্ডেড ইউপিএস মাত্র ৩২০০/=

৩.লাইফ ওয়ারেন্টি সহ র‌্যাম মাত্র ১৪০০/=

৪.বাসা বা অফিসের ফ্যাক্টরির যে কোন স্পর্ষকাতর স্থানের নিরাপত্তা বিধানের জন্য পৃথিবীর যে কোন স্থান থেকে সার্বক্ষনিক নজরদারির জন্য আইপি ক্যামেরা মাত্র ১০,০০০।

৫. পকেট ওয়াই-ফাই রাউটার যা দিয়ে ৫০ গজ দূরত্বের মধ্যে খোলা মাঠে ময়দানে বা কোন চত্তরে কমপক্ষে ৫ জন বা ততোধিক ব্যাক্তি তারহীন ইন্টারনেট ব্যাবহারের অবিশ্বাস্য সূলভ মুল্যের ওয়াই-ফাই ডিভাইস।

এ ধরনের আরও অনেক চমকপ্রদ কম্পিউটার,নেটওয়ার্কিং ও আনুসাঙ্গিক অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত খ্যাতনামা ব্রান্ডেড কোম্পানীর যাবতীয় ডিভাইসের জন্য ভিজিট করুন :প্রোডাক্ট পেজ।

PRODUCT PAGE


ALL OF NEWSPAPER

undefined

E COMMERCE

BANGLA PAPER

ENGLISH PAPER

বাংলাদেশের আকর্ষনীয় মনোমুগ্ধকর পর্যটনস্পট দিনাজপুর, লোহাগাড়া, ও কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান ভ্রমন নির্দেশিকা

দিনাজপুরের ভ্রমন নির্দেশিকা

দিনাজপুরের পথে পথে

দিনাজপুর শহরের উত্তর-পূর্ব পাশে অবস্থিত ধবংসপ্রায় এ রাজবাড়িটি। প্রবেশপথের শুরুতেই ডানদিকে চোখে পড়বে ছোট একটি প্রাচীন কৃষ্ণ মন্দির। আর বা দিকে রয়েছে প্রাচীন রাজপ্রাসাদের ধবংশাবশেষ এবং একটু ভেতরের দিকে রয়েছে আরেকটি মন্দির। প্রায় সতের একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত এ রাজবাড়িতে এক সময় জমিদারবাড়ির প্রধান তিনটি মূল অংশে আয়না মহল, রানি মহল ও ঠাকুরবাড়ি মহল ছাড়াও বেশ কয়েকটি মন্দির, অতিথিশালা, চিকিৎসালয়, রাজ কর্মচারীদের আবাসস্থল, দীঘি ইত্যাদি ছিল। আর এগুলোর বেশিরভাগই নির্মান করেছিলেন মহারাজা প্রাণণাথ ও তার পোষ্যপুত্র রামনাথ অষ্টাদশ শতাব্দীর কোনো একসময়। এ সবকিছুই এখন পড়ে আছে শুধু ধবংসস্তুপ হয়ে। দিনাজপুর শহর থেকে এখানে রিকশায় আসতে সময় লাগে আধা ঘন্টার মতো।

চেহেলগাজী মাজার ও মসজিদ: দিনাজপুর শহর থেকে সাত কিলোমিটার উত্তরে দিনাজপুর-রংপুর সড়কের পশ্চিম পাশে অবস্থিত এ অঞ্চলের এক সময়ের সাধু পুরুষ চেহেলগাজীর মাজার ও মসজিদ দিনাজপুর শহর থেকে সাত কিলোমিটার উত্তরে দিনাজপুর রংপুর সড়কের পশ্চিম পাশে অবস্থিত এ অঞ্চলের এক সময়ের সাধু পুরুষ চেহেলগাজীর মাজার ও মসজিদ। দিনাজপুর জাদুঘরে সংরক্ষিত এ মসজিদের একটি শিলালিপি থেকে জানা যায় সুলতান রুকনুদ্দীন বারবক শাহের রাজত্বকালে তার উজির ইকরাব খানের নির্দেশে দিনাজপুর পরগনার শাসনকর্তা উলুঘ নুসরাত খান এ মসজিদটি ৮৬৫ হিজরি তথা ১৪৬০ খ্রিষ্টাব্দে এটি নির্মান করেন। চার পাশের দেয়াল ছাড়া বর্তমানে মসজিদের সবকিছুই ধংশ হয়ে গেছে। আর মসজিদের আরেকটি শিলালিপি থেকে জানা যায় ১৪৬০ খ্রিষ্টাব্দে চেহেলগাজী মসজিদ নির্মাণের সময় মাজারটি সংস্কার করা হয় জনশ্র“তি আছে ৪০ জন গাজীকে (ধর্মযোদ্ধা ) এখানে একত্রে সমাহিত করা হয়েছিল এ জন্য এ স্থানের নাম চেহেল(চল্লিশ) গাজী। দিনাজপুর শহর থেকে বাসে কিংবা রিকশায় আসতে পারেন এখানে।

কান্তজিউ মন্দির: দিনাজপুর শহর থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে কাহারোল থানার কান্তনগর গ্রামে অবস্থিত কান্তজিউ মন্দির অনেকের মতে কান্তনগরে স্থাপিত বলে এর নাম কান্তজিউ মন্দির জনশ্র“তি আছে শ্রী-কৃষ্ণের বিগ্রহ অধিষ্ঠানের জন্য এ মন্দির নির্মিত হয়েছিল দিনাজপুরের তৎকালীন জমিদার প্রাণণাথ রায় ১৭২২ খ্রিষ্টাব্দে পোড়ামাটির অলঙ্করন সমৃদ্ধ এ মন্দিরটির নির্মান কাজ শুরু করেন। তবে তার জীবদ্দশায় এ মন্দিরের নির্মান কাজ শেষ করেন। এর পরে তিনি এ মন্দিরটি শ্রী কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন। সামগ্রিক সৃষ্টিতে মন্দিরটি দেখতে সূবৃহৎ রথের মতো। দিনাজপুর কেন্দ্রীয় বাস ষ্টেশন থেকে পীরগঞ্জের বাসে কান্তনগর নামতে হবে। ভাড়া জনপ্রতি ২০-২৫ টাকা। সেখানে থেমে ঢেপা নদী পার হয়ে একটু সামনেই মন্দিরটি। শীতের সময় নদী পায়ে হেটে পার হতে পারলেও এই বর্ষায় কিন্তু নৌকায় পার হতে হবে।

রামনগর: দিনাজপুর শহর থেকে আট কিলোমিটার দক্ষিণে আউলিয়াপুর ইউনিয়নে অবস্থিত রামসাগর দীঘি। প্রজাদের সেচ সুবিধা ও জলকষ্ট দূরীকরনের লক্ষ্যে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচীর মাধ্যমে রাজা রামনাথ এ দীঘি খনন করেন। চারপাশের চত্ত্বরসহ এ দীঘির মোট আয়তন প্রায় ৪৩৭৪৯২ বর্গমিটার। মূল দীঘি অর্থাৎ জলভাগের দৈর্ঘ্য ১০৩১ মিটার আর প্রস্থ ৩৬৪ মিটার। দীঘির চারপাশে মনোরম বাগান বেষ্টিত। শহর থেকে রিকশায় যেতে সময় লাগে প্রায় এক ঘন্টা।

স্বপ্নপুরী: দিনাজপুর শহর থেকে প্রায় ৫২ কিলোমিটার দূরে নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জে অবস্থিত বেসরকারী পর্যটন কেন্দ্র স্বপ্নপুরী। প্রায় ১৫০ একর জমির উপরে এখানে নির্মান করা হয়েছে চিড়িয়াখানা, বাগান, লেক, রেষ্ট হাউজ, বনভোজন কেন্দ্র ইত্যাদি। দিনাজপুর শহর থেকে বাসযোগে সহজেই আসতে পারেন স্বপ্নপুরী।

কীভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে দিনাজপুরের দূরত্ব সড়কপথে ৪১৪ কিলোমিটার এবং রেলপথে ৪৮৩ কিলোমিটার। এছাড়া খুলনা ও রাজশাহী থেকে সড়পপথ ও রেলপথে দিনাজপুর আসা যায়। ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী বাস ছাড়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। ভাড়া ৩০০-৩৫০ টাকা। এ পথে ভালো বাস সার্ভিস হলো হানিফ এন্টারপ্রাইজ, এসআর ট্রাভেলস, কেয়া পরিবহন, এসএ পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন। কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন আন্ত:নগর দ্রুতযান ছাড়ে সন্ধ্যা ৭ টা ৫ মিনিটে। আর আন্ত:নগর একতা এক্সপ্রেস ছাড়ে সকাল ৯টা ৫০ মি: ভাড়া শোভন সিট ১৮৫ টাকা, শোভন চেয়ার ২৫০, প্রথম শ্রেনি চেয়ার ৩৫০, প্রথম শ্রেণি বার্থ ৫৩৫, এসি চেয়ার ৬১৮, এসি বার্থ ৮৯৭ টাকা। দিনাজপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ছাড়ে সন্ধা ৬টা ১০ মিনিটে আর একতা এক্সপ্রেস ছাড়ে সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে।

কোথায় থাকবেন: দিনাজপুর শহরে থাকার জন্য ভালো মানের হেটেল হচ্ছে পর্যটন মোটেল । ফোন- ০৫৩১-৬৪৭১৮। এ ছাড়া ঢাকায় পর্যটনের প্রধান কার্যালয় থেকেও এ মোটেলের বুকিং দিতে পারবেন: ফোন- ৯৮৯৯২৮৮-৯১। এ ছাড়া দিনাজপুরের অন্যান্য সাধারন মানের হোটেলে ১০০-৮০০ টাকায় রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা আছে। কয়েকটি সাধারণ মানের হোটেল হলো মালদহ পট্টিতে হোটেল ডায়মন্ড- ফোন: ০৫৩১-৬৪৬২৮ নিমতলায় হোটেল আল রশিদ- ০৫৩১-৬৪২৫১

কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে ভ্রমণ:

সারি সারি পাহাড়ের ঢালে এ উদ্যানের প্রাকুতিক সৌন্দর্য অবর্ণনীয়। নানা রকম গাছপালা সমৃদ্ধ এ উদ্যানের উল্লেখ্যযোগ্য গাছপালা হলো সেগুন, চাপালিশ, জারুল, চম্পা, সোনালু, চালতা, চিকরাশি, মাল, শিলকড়ই, ধারমারা, গামারি, অর্জুন, আমলকি, আমড়া, বহেরা, বাজনা, বড়ই, পিটরাজ, পিটালী, বাশপাতা, বৈলাম, নাগেশ্বর, চিকরাশী, হিজল, উদল, উরিয়া, লোহাকাঠ ইত্যাদি। এসব গাছপালার ছায়ার নিচ দিয়ে বিস্তৃত পায়ে হাটাপথগুলো দিয়ে চললে হারিয়ে যেতে মন চাইবে অজানায়। নানা জীববৈচিত্র্যেও সমৃদ্ধ এ বনাঞ্চল। কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানের বাসিন্দা বন্যপ্রাণীর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো বন্যহাতি, হরিণ, হনুমান, উল্লুক, শুকর, বনবিড়াল, গুইসাপ, অজগর ইত্যাদি। বর্তমানে প্রায়ই এ বনে দেখা মিলছে বন্যহাতির। দলবেধে হাতিরা এ বনের ভিতরে ঘুরে বেড়ায় অবাধে। বিভিন্ন প্রজাতির পাখ-পাখালির অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র এই জঙ্গল। ধনেশ,

ময়ুর, ফিঙে, বুলবুলি, বনমোরগ, ময়না, ঘুঘু, টিয়া, মাছরাঙা প্রতৃতি পাখির আবাসস্থল বন। নীরবতা অবলম্বন করে চললে এসব পাখির সহজেই দেখা মেলে এ বনে। নিসর্গ (বর্তমান আইপ্যাক) বন এলাকা ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির আওতায় বেশ কয়েকটি পর্যক্ষেন স্থান আর পায়ে হাটা পথ তৈরি করা হয়েছে এ বনে। এখানকার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও উল্লেখ্যযোগ্য পথটি হলো ব্যাঙছড়ি মাঝারি বনপথ। চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কের ব্যাঙছড়ি মারমা পাড়া থেকে শুরু হওয়া বনের ভেতর এ পথটির দৈর্ঘ্য প্রায় আড়াই কিলোমিটারের একটু কম। এ পথটিতেই জীব বৈচিত্র্য সবচেয়ে বেশি। এ পথে বেশ কয়েকটি পর্যবেক্ষন স্থান আছে। উচু-নিচু পাহাড়ি এ পথে আরও আছে ছোট-বড় ছড়া। কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান এলাকায় আছে মারমা আদিবাসী সম্প্রদায়ের দুটি গ্রাম। একটি ব্যাঙছড়ি মারমাপাড়া আর চৎমুরং বড়পাড়া। এসব গ্রামে দেখতে পারেন আদিবাসীদের বৈচিত্র্যময় জীবনধারা। গ্রামে প্রবেশের আগে অবশ্যই কারবারি বা হেডম্যানের অনুমতি নিয়ে নেবেন।

যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে বাস, রেল কিংবা আকাশপথে চট্টগ্রাম আসতে হবে। চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাস ষ্টেশন থেকে সকাল-সন্ধ্যা পনেরো মিনিট পরপর বাস ছেড়ে যায় কাপ্তাইয়ের উদ্দেশ্যে। পৌছুতে সময় লাগে দেড় দুই ঘন্টা। ভাড়া ৮০-১০০ টাকা। এ ছাড়া ঢাকা থেকে সরাসরি কাপ্তাই যায় ডলফিন, সৌদিয়া, এস আলম, শ্যামলী পরিবহনের নন-এসি বাস। ঢাকার কলাবাগান, ফকিরাপুল ও সায়দাবাদ থেকে এসব বাস ছেড়ে যায়। ভাড়া ৪৫০-৫৫০ টাকা। কোথায় থাকবেন: কাপ্তাই থাকার জন্য সাধারণ মানের কিছু হোটেল আছে। কাপ্তাই শহরের এসব হোটেল হলো-হোটেল থ্রি ষ্টার,হোটেল নিরাপদ, বোয়ালখালি বোর্ডিং, কামাল বোর্ডিং ইত্যাদি। এসব হোটেলে ২০০-৬০০ টাকায় দু জন থাকার কক্ষ আছে।

এ ছাড়া বন বিভাগের রেষ্ট হাউসে থাকতে হলে পূর্বানুমতির প্রয়োজন হবে, কাপ্তাই এলাকায় খাবার জন্য সাধারণ মানের বেশ কিছু রেস্তোরা আছে। সবচেয়ে ভালো খাবারের জন্য বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের ঝুম রেস্তোরা উৎকৃষ্ট। কী করবেন: জঙ্গলে ভ্রমণে সবসময় হালকা কাপড় ও জুতা এবং কেমোফ্লেজ রঙের কাপড় পরিধান করবেন। রোদ চশমা, রোদ টুপি, ছাতা, পানির বোতল, সঙ্গে নেবেন। বর্ষায় ভ্রমণে গেলে অবশ্যই রেইনকোট কিংবা পনচ সঙ্গে নিন। পোকামাকড়ের ও মশার হাত থেকে বাচতে পতঙ্গনাশক ক্রিম সঙ্গে নিন। দূরের বন্যপ্রাণী ও পাখি দেখতে দূরবীন নিতে পারেন। জঙ্গলে ভ্রমনকালীন সর্বোচ্চ নীরবতা অবলম্বন করুন। প্লাষ্টিক জাতীয় প্যাকেট, বোতল, ক্যান সঙ্গে এনে বাইরে কোথাও ফেলুন। কী করবেন না: পিকনিক করতে জঙ্গলে যাবেন না। ভ্রমণে উচ্চ শব্দে মাইকে গান কিংবা কোনো কিছু বাজাবেন না। বন্যপ্রাণীরা বিরক্ত হয় এমন কোনো শব্দ কিংবা আওয়াজ করবেন না। ময়লা, প্লাষ্টিক জাতীয় কোনো কিছু জঙ্গলে ফেলবেন না। বনে ধুমপান করবেন না। প্রয়োজনীয় তথ্য: কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে একাকী ভ্রমন না করাই ভালো। দলবদ্ধভাবে ভ্রমণে গেলে অবশ্যই অভিজ্ঞ গাইড সঙ্গে নেওয়া ভালো। তাতে জঙ্গলে ভ্রমণ এবং বন্যপ্রাণী দর্শন সহজ হবে কাপ্তাই উদ্যানে আইপ্যাক প্রশিক্ষিত কয়েকজন গাইড আছেন। নির্ধারিত সম্মানির বিনিময়ে এসব গাইডের সেবা নেওয়া যাবে। কয়েকজন গাইডের মোবাইল নং: করিমউদ্দিন; ০১৮২২২৭৩১৮০, নান্টু চাকমা: ০১৮৩১৫৪৬০৪২,মং চিং ই মারমা: ০১৮২২১৫৩৫৩৭, বিপ্লব বড়–য়া: ০১৮১২০৭৫৪৪৫ এছাড়া যে কোন প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানের কার্যালয়ে: ০৩৫২৯-৫৬৩৫৭।

মায়াবী স্বপ্নময় প্রকৃতি লোহাগাড়া

দেখে আসুন লোহাগাড়ার বন-পাহাড়:

খড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। আমাদেও প্রিয় এই মাতৃভূমির প্রকৃতি সাজিয়েছে অকৃপণভাবে। বন, পাহাড়, খাল, বিল নদী সাগর প্রকৃতির প্রায় সব উপাদানই রয়েছে দেশটিতে। ফলে দেশের অধিকাংশ অঞ্চলেই রয়েছে পর্যটন শিল্প গড়ে ওঠার অপার সম্ভাবনা। তেমনই একটি অঞ্চল চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা। চট্টগ্রামে জেলা সদর থেকে ৬৫ কিলোমিটার দক্ষিনে এর অবস্থান। আয়তন প্রায় ২৫৯ বর্গ কিলোমিটার। সারি সারি পাহাড়, বন এবং ডলু-টংকার মত ১৩ টি সৃজিত খালে সমৃদ্ধ অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত লোহাগাড়ায় রয়েছে পর্যটন শিল্প বিকাশের অমিত সম্ভাবনা। এখন প্রয়োজন কেবল লোহাগাড়ায় স্বয়ংস্বম্পূর্ন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ। উপজেলার চুনতি, চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারন্য, পদুয়া ফরেস্ট রেঞ্জ অফিস সংলগ্ন এলাকা, বড়হাতিয়া, পুটিবিলা, কলাউজান ও পদুয়া পাহাড়ি অঞ্চলে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হাজার পর্যটক লে াহাগাড়ার উপর দিয়ে কক্সবাজারের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে যায়। কিন্তু স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত লোহাগাড়ায় স্বয়ংস্বম্পূর্ন কোন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে না ওঠায় এলাকাবাসী হতাশ। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলেও সেগুলোতে সুযোগ-সুবিধার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। দৃষ্টিনন্দন চুনতি গ্রাম, চুনতি অভয়ারন্য ও পদুয়া ফরেষ্ট রেঞ্জ এলাকাকে সহজেই পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তিরিত করা যেতে পারে। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় হবে।

কিভাবে যাবেন: সড়ক পথ-চট্টগ্রাম শহরের অলংকার মোড়, গরিব উল্লাহ শাহ মাজার, নাছিরাবাদ, সিনেমা প্যালেস ও বহদ্দারহাটসহ বিভিন্ন স্থান থেকে সৌদিয়া, এস. আলম, শ্যামলী, হানিফ পরিবহে নর বাসসহ বিভিন্ন বাসযোগে চট্টগ্রাম- কক্সবাজার সড়কপথে লোহাগাড়ায় যাওয়া যায়। এছাড়াও মাইক্রোবাসযোগেও সেখানে যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। লোহাগাড়া বটতলী পর্যন্ত বাস ভাড়া ১২০ টাকা আর মাইক্রোবাসের ভাড়া ৮০-১০০ টাকা। সময় লাগে দুঘন্টা। চট্টগ্রাম থেকে বাস অথবা মাইক্রোবাসযোগে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কস্থ চুনতি, হোটেল মিডওয়ে ইন, চুনতি ফরেষ্ট অফিসের সামনে ও চুনতি বনপুকুর এলাকায় যেতে পারেন। উপভোগ করতে পারবেন চুনতি গ্রাম ও চুনতি অভয়ারন্যেও অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য। চট্টগ্রাম শহর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের বার আউলিয়া এলাকায় নেমে পূর্বদিকে আধ কিলোমিটার দূরে গেলে আপনি পৌছে যাবেন পদুয়া ফরেষ্ট রেঞ্জ এলাকায়।

থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা: লোহাগাড়া বটতলীতে মিডনাইট, সৌদিয়া ও এম.কে. টাওয়ার, কক্সবাজার বোর্ডিংসহ অন্যান্য আবাসিক হোটেলে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। ও.আই.সি এবং চুনতি এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে হোটেল মিডওয়ে ইন-এ ভালো খাবার পাওয়া যায়। হোটেল ও.আই.সি ও মিডওয়ে ইন এ ঢাকা ও চট্টগ্রামের এসি ও ননএসি বাসগুলো যাত্রা বিরতি করে। চুনতি গ্রাম: উপজেলার একটি ইউনিয়নের নাম চুনতি। এই ইউনিয়নের একটি গ্রামের নামও চুনতি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমণ্ডিত এ অঞ্চলের বৃক্ষরাজি, পাহাড় এবং সেখানে সৃজিত বাগান, পাখির কলতান সবমিলিয়ে এটি হতে পাওে একটি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র।

এ গ্রামটির পূর্ব-দক্ষিণে পাহাড় এবং উত্তর-পশ্চিমে এর গা ঘেষে চলে গেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। চট্ট্রগ্রাম শহর থেকে ৬৫ কি.মি দক্ষিে ন এ গ্রামের অবস্থান। চনতির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বললেন, তাদেও এই গ্রামটিতে পর্যটন কেন্দ্র হলে সরকারের প্রচুর আয় হবে।

যেভাবে যাবেন: দুর্গাপুর আর কলমাকান্দায় যাবার বিশেষ সুবিধা হলো ঢাকার মহাখালি থেকে সরাসরি বাসে যাতায়াত। সকাল ৭টা থেকে বাস ছাড়ে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত চলে বাস। দূর্গাপুর যেতে সময় লাগে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা। দূরত্ব ১৬০ কিলোমিটার। মহাখালি থেকে শাহ সুলতান বাস সার্ভিস, নেত্র পরিবহন ছাড়াও কয়েকটি বাস সার্ভিস রয়েছে। এছাড়া বিআরটিসি বাস ছাড়ে গুলিস্থান থেকে। বাস ভাড়া ২৫০ টাকা। তবে যাতায়াতের জন্য কোন এসি বাস নেই। মাইক্রোবাসেও পরিবার নিয়ে যাওয়া যায়। ভাড়া ৫ হাজার টাকা। ঢাকা থেকে ভেঙ্গে ভেঙ্গেও যাওয়া যায়। মহাখালি থেকে মযমনসিংহ, পরে ময়মনসিংহ থেকে ব্রক্ষপুত্র সেতুর পারে দুর্গাপুরের বাস । আবার ঢাকা থেকে ট্রেনেও যাওয়া যায়। প্রথমে ময়মনসিংহ পরে ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া-কাঞ্জাইল রেল ষ্টেশন। সেখান থেকে বাসে বা টেম্পোতে দূর্গাপুর। দুর্গাপুরে রিকশায়ও চলাচল করতে পারবেন। কেন্দুয়া ও ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে/মাইক্রোবাসে যাওয়া আসা করা যায়। বিরিশিরি হতে রানীখং ভাড়া করা মোটর সাইকেলে অথবা নৌকাযোগে যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে মদনের মাহখালি থেকে এবং কমলাপুর থেকে বাসে যাতায়াত করা যায়। বাস ভাড়া ২৫০ টাকা।

চুনতি অভয়ারন্য; জীব বৈচিত্র্য সমৃদ্ধ বনাঞ্চল নিয়ে গঠিত চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারন্য প্রকৃতির অপরূপ লীলাভূমি। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ঘেষে বিশাল এলাকা নিয়ে এ অবস্থান। এই অভয়ারণ্যে প্রচুর হাতি, বন্য শুকর, বানর, হনুমান, মায়া হরিণ, সাম্বার, বিভিন্ন দুর্লভ প্রজাতির পাখি রয়েছে। ১৯৮৬ সালে ৭টি সংরক্ষিত বনভূমি নিয়ে এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ইতিমধ্যে সরকারি-বেসরকারীভাবে নয়নাভিরাম পাহাড়ের ঢালে স্থাপিত হয়েছে রেষ্ট হাউজ ও ডাকবাংলো। পর্যটকদেও কাছে বিশেষ আকর্ষণ হতে পাওে অভয়ারণ্য এলাকায় পুকুর, গর্জনের বন, গয়ালমারা প্রাকৃতিক হ্রদ, বনপুকুর ফ্রুটটেইল, জাংগালীয়া ফ্রুটট্রেইল, পর্যটন টাওয়ার, গোলঘর, ষ্টুডেন্ট ডরমেটরী, নেচার কনজারভেশন সেন্টার, গবেষণা কেন্দ্রসহ নানা কিছু। অভয়ারন্যের সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা জানান এটিকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ার জন্য ইকোট্যুরিজমের কিছু বিশেষ আকর্ষণ বিশেষ কওে পর্যটন অবকাঠামো তৈরি করা হলে এটি দেশের অন্যতম ইকোপার্কে পরিণত হবে। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা আয় হবে।

পদুয়া ফরেষ্ট রেঞ্জ: উপজেলার পদুয়া ফরেষ্ট রেঞ্জ অফিসের চারদিক ঘিরে রয়েছে সারি সারি বৃক্ষরাজি। বিশাল এই এলাকাটি সম্ভাবনাময় একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। লোহাগাড়া বন বিভাগের অধীনে ১১শ’ হেক্টও জমির মধ্যে পদুয়া ফরেষ্ট রেঞ্জ অফিসের চারপাশে প্রায় ৩ হাজার একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত এই বনাঞ্চলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বারআউলিয়া এলাকার সামান্য পূর্বদিকে উপজেলা হাসপাতালের কাছেই এর অবস্থান। বনটির জীববৈচিত্র্য সংরক্ষনসহ ইকোপার্ক সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হলে এই এলাকাটি দেশি-বিদেশী পর্যটকদেও কাছে আরো আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। উপজেলা চেয়্যারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবূলও জানালেন সেই কথা। তিনি দু:খ করে বললেন , পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত সেখানে স্বয়ংস্বম্পূর্ন কোন পর্যটন কেন্দ্র স্থাপিত হয়নি। উপজেলায় চুনতিসহ এমন কিছু এলাকা আছে যেগুলোকে সহজেই পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তর করা যেতে পারে। এতে পর্যটকের সংখ্য বৃদ্ধি পাবে, সরকারেরও কোটি কোটি টাকা আয় হবে।                                            

PAGE 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40